যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, কানাডাসহ ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কঠোর ভাষায় তিরস্কার করেছে তুরস্ক। তুর্কি সমাজকর্মী ওসমান কাভালার মুক্তি দাবি করে যৌথ বিবৃতি দেওয়ায় মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) তাদের ডেকে পাঠিয়েছিল আঙ্কারা।
২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে বন্দি রয়েছেন ওসমান কাভালা। অভিযোগ, তিনি ২০১৩ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে জড়িত ছিলেন। ২০১৬ সালে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানেও তার সমর্থন ছিল বলে দাবি করা হয়। এক মার্কিন ধনকুবেরের যোগসাজশে কাভালা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ এরদোয়ান সরকারের। তবে সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন ৬৪ বছর বয়সী এ ব্যবসায়ী।
গত সোমবার (১৮ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইডেনের রাষ্ট্রদূতরা যৌথ বিবৃতি জারি করে কাভালার মামলায় ‘দ্রুত ন্যায়বিচার’-এর দাবি জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, ইচ্ছা করে এই বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হচ্ছে। এর ফলে তুরস্কের বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূতদের পক্ষ থেকে তুরস্ককে বলা হয়েছে, তারা যেন কাউন্সিল অব ইউরোপের রায় মেনে নেয়। কাউন্সিল বলেছে, আগামী ৩০ নভেম্বর তাদের পরবর্তী বৈঠকের আগে কাভালাকে মুক্তি না দিলে তারা তুরস্কের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলবে এবং ব্যবস্থা নেবে। তুরস্ক ১৯৫০ সাল থেকে এই মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য।
তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, চলমান কোনো মামলার বিষয়ে রাষ্ট্রদূতরা সুপারিশ করবেন, এটি মেনে নেওয়া যায় না। টুইটারে তিনি বলেন, যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাতে আপনারা গণতন্ত্র ও আইন কতটা বোঝেন তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার আঙ্কারায় তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন ডেকে পাঠানো ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত। সেখানে প্রায় ২০ মিনিট ধরে তুর্কি কর্মকর্তাদের তিরস্কার শোনেন পশ্চিমা কূটনীতিকরা।
বৈঠক শেষে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, কাভালার মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়ে গ্রহণযোগ্য কূটনৈতিক আচরণের ‘সীমা লঙ্ঘন’ করেছেন কূটনীতিকরা। এই বিবৃতি আইনি প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক করার এবং তুর্কি বিচার বিভাগ, আইনের শাসন এবং গণতন্ত্রকে চাপে ফেলার প্রচেষ্টা।
Source: Jagonews24